পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গানোর নিয়ম ও মেয়াদ শেষ হবার আগে পরিবার সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলবেন যেভাবে-
মেয়াদ শেষ হবার আগে পরিবার সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলবেন যেভাবে-
মেয়াদপর্তির পূর্বে পরিবার সঞ্চয়পত্র নগদায়ন বা ভাঙ্গানো। আপনি যদি সঞ্চয়পত্র ক্রয় বা মেয়াদ শেষ হবার আগে সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলবেন ভাবছেন, তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন। পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ হবার আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গাতে বা মুল টাকা তুলতে গেলে কত দিনে কত টাকা মুনাফা আসবে বা মুলধন থেকে কত টাকা কেটে রাখবে, বিস্তারিত থাকছে আজকের আলোচনায়। এছাড়াও সঞ্চয়পত্র বিষয়ের যাবতীর তথ্য বা পরামর্শ পাবেন এখানেই।
আমরা যারা সঞ্চয়পত্র ক্রয় করে থাকি, তারা একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জমা রেখে থাকি। সঞ্চয়পত্রের ধরণ অনুযায়ী সঞ্চয়পত্র বিভিন্ন মেয়াদের হয়ে থাকে। যেমন-
১) পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ ০৫ বছর,
২) তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ ০৩ বছর,
৩) পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ ০৫ বছর এবং
৪) বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ ০৫ বছর।
♦ মেয়াদপূর্তির পূর্বে পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গালে বা নগদায়ন করলে যে হারে মুনাফা দেয়া হয়ে থাকে।
# ১ বছর শেষে মুনাফার হার - ৯.৫০%,
# ২ বছর শেষে মুনাফার হার - ১০%,
# ৩ বছর শেষে মুনাফার হার - ১০.৫০%,
# ৪ বছর শেষে মুনাফার হার - ১১% এবং
# ৫ বছর শেষে মুনাফার হার - ১১.৫২%।
♣♣ সঞ্চয়পত্র বিষয়ে আরো পড়েন - এই লিঙ্কে
♦বছর ভিত্তিক পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গানোর নিয়মঃ
যদি কোন কারণে মেয়াদ শেষ হবার আগে পরিবার সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলতে হয় তাহলে নিম্নের হিসাবে টাকা দেওয়া হয়। এতে যে কোন প্রতিষ্টান থেকে পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় থাকেন না কেন সব প্রতিষ্টানের হিসাবই একই। যেমন - বাংলাদেশ ব্যাংক, তফসিলী ব্যাংক, বাংলাদেশ পোস্ট অফিস, সঞ্চয় ব্যুরো সহ যাবতীয় প্রতিষ্টানে একই হিসাবে টাকা প্রদান করা হয়ে থাকে। নিচে এক লক্ষ টাকার বছর ভিত্তিক পরিবার সঞ্চয়পত্রের হিসাব দেয়া হলো।
♦ প্রথম বছর শেষে পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গালেঃ
* ১ বছর শেষে সুদ - ৯.৫০% হারে এক লক্ষ টাকার সুদ ৯৫০০/= টাকা। কিন্তু প্রতি মাসে ৯৬০/- টাকা করে বার মাসে ৯৬০*১২=১১৫২০/- ( পাঁচ বছরের হিসাবে)টাকা দেয়া হয়ে থাকে। পরিবার সঞ্চয়পত্রে প্রথম বছরে মুনাফা আসে ৯৫০০/- টাকা আর পাঁচ বছরের হিসাবে সুদ দেয়া হয়েছে ১১৫২০/- টাকা। অতিরিক্ত (১১৫২০-৯৫০০)=২০২০ টাকা মুল জমাকৃত টাকা থেকে কেটে রাখা হয়।
♦ দ্বিতীয় বছর শেষে পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গালেঃ
* ২ বছর শেষে সুদ ১০% হারে এক লাখ টাকার সুদ বছরে ১০,০০০/- টাকা। কিন্তু প্রতি মাসে ৯৬০/- টাকা করে বার মাসে ১১৫২০/- টাকা মুনাফা দেয়া হয়ে থাকে। দুই বছরে মুনাফা আসে বছরে ১০,০০০/- টাকা করে মোট = ২০,০০০/- টাকা আর পাঁচ বছরের হিসাবে বছরে সুদ দেয়া হয়েছে ১১৫২০/- টাকা করে দুই বছরে (১১৫২০*২)= ২৩০৪০/- টাকা। অতিরিক্ত (২৩,০৪০-২০,০০০)= ৩০৪০/- টাকা জমাকৃত টাকা থেকে কেটে রাখা হয়।
♦তৃতীয় বছর শেষে পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গালেঃ
* ৩ বছর শেষে সুদ ১০.৫০% হারে এক লাখ টাকার সুদ বছরে ১০,৫০০/- টাকা করে ৩ বছরে (১০,৫০০*৩)=৩১,৫০০/- টাকা মুনাফা দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু প্রতি মাসে ৯৬০/- টাকা করে বার মাসে ১১,৫২০/- টাকা করে তিন বছরে মোট ৩৪,৫৬০/- টাকা দেয়া হয়। ৩৪,৫৬০/- টাকা থেকে ৩১,৫০০/- টাকা বাদ দিলে ৩০৬০/- টাকা মুল জমাকৃত টাকা থেকে কেটে রাখা হয়।
♦ চতুর্থ বছর শেষে পরিবার সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গালেঃ
* ৪ বছর শেষে সুদ ১১% হারে প্রতি লাখে ১১,০০০/- টাকা করে চার বছরে (১১০০০*৪)= ৪৪,০০০/- টাকা মুনাফা দেয়া হয়। কিন্তু প্রতি মাসে ৯৬০/- টাকা করে বার মাসে ১১,৫২০/- টাকা করে চার বছরে মুনাফা দেয়া হয়ে থাকে (১১৫২০*৪)=৪৬০৮০/- টাকা। ৪৬,০৮০/- টাকা থেকে ৪৪,০০০/- টাকা বাদ দিলে অতিরিক্ত (৪৬০৮০-৪৪০০০)=২০৮০/- টাকা মুল জমাকৃত টাকা থেকে কর্তন করে রাখা হয়।
♣♣ সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের আবেদন ফরম ডাউনলোড - এই লিঙ্কে।
♦ পরিবার সঞ্চয়পত্রের উল্লেখযোগ্য তথ্যঃ
আর যদি এক বছর শেষ হওয়ার আগে মুলধন উত্তোলন করতে গেলে কোন মুনাফা দেয়া হয় না। এছাড়া পাঁচ বছর/মেয়াদ শেষ হবার পরে তুলেন তাহলে মুল জমাকৃত টাকা থেকে কোন প্রকার কর্তন করা হয় না।
♣ পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?
# পাসপোর্ট সাইজের ছবি ০২ কপি।
# জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
♣ পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কত?
# সুদের হার ১১.৫২%।
♣ পরিবার সঞ্চয়পত্রে লাভ কত?
# প্রতি লাখে ৫৭,৬০০/- টাকা (০৫ বছরে)
♣আরো তথ্যঃ
♦ ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক - মেয়দী হিসাবঃ
♦পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের নতুন নিয়মঃ
♦ দ্বিগুনের চেয়ে বেশি লাভঃ